তারাবির নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
পবিত্র রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে নামাজ আদায় করতে হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে। রাসুল (সা:) নিজেও তারাবির নামাজ আদায় করেছেন এবং আমাদেরও এই নামাজ আদায় করতে বলেছেন। তারাবির নামাজের নিয়ম হলো অন্য ২ রাকাত নামাজের মতোন। ২ রাকাত করে মোট ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়।
যদি রবিবারে রমজানের চাঁদ দেখা যায় তাহলে সেই দিন তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে এবং সোমবারে হবে প্রথম রোজা। রবিবারে এশার নামাজের পর তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে।
এই তারাবির নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে। বুখারি শরিফের একটি হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, রাসুল (সা:) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি ইমানের সাথে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য পবিত্র রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করে, তাহলে সেই ব্যক্তির অতীতের সকল গুনাহ খাতা ক্ষমা করে দেবেন।
তারাবি নামাজের নিয়ত
আরবি ও বাংলা আপনি তারাবির নামাজের নিয়ত করতে পারেন। আরবিতে তারাবির নামাজের নিয়ত হলো - "নাওয়াাইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা, রকাআতাই সালাতিত তারাবিহ, সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।"
বাংলায় তারাবির নামাজের নিয়ত হলো - "আমি কেবলামুখি হয়ে দুই রাকাআত তারাবির সুন্নতে মুয়াাক্কাদাহ নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।"
যদি জামাআত এর সাথে আদায় করেন তাহলে এই ভাবে নিয়ত করতে হবে - "আমি কেবলামুখি হয়ে ইমামের পেছনে দাড়িয়ে জামাআত এর সাথে দুই রাকাআত তারাবির সুন্নতে মুয়াাক্কাদাহ নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।"
তারাবির নামাজ কিভাবে পড়বেন
প্রতি দুই রাকাত করে তারাবির নামাজ আদায় করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়। এর পর আবার দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। এই ভাবে ২ রাকাত করে মোট ২০ রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। প্রতি ৪ রাকাত নামাজ আদায় করার পরপর একটু বিশ্রাম নেওয়া যায়। এই বিশ্রাম করার সময় তাসবিহ, দোয়া-দরূদ এবং জিকির করা উত্তম।
এশার ফরজ ও সুন্নত নামাজের পরে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়। বেতের নামাজ তারাবির নামাজ শেষ করে আদায় করতে হয়। তারাবির নামাজ ২ ভাবে আদায় করা যায়, সূরা তারাবি এবং খতম তারাবি। সূরা তারাবির থেকে খতম তারাবির নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
সূরা তারাবির নামাজের নিয়ম
- প্রথমে তাকবিরে তাহরিমা "আল্লাহু আকবার" বলে তারাবির নামাজের নিয়ত বাঁধতে হবে।
- এরপর ছানা পঠ করতে হবে।
- এবার সূরা ফাতেহা পাঠ করতে হবে।
- সূরা মিলানো তথা যে কোনো একটি সূরা পাঠ করতে হবে।
- এরপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুকু ও সেজদা আদায় করতে হবে।
- এভাবেই দ্বিতীয় রাকাআত নামাজ আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হবে।
- এই ভাবে তারাবির ২ রাকাত নামাজ শেষ করতে হবে। একই ভাবে মোট ২০ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে।
খতম তারাবির নামাজের নিয়ম
- প্রথমে তাকবিরে তাহরিমা "আল্লাহু আকবার" বলে তারাবির নামাজের নিয়ত বাঁধতে হবে।
- এরপর ছানা পঠ করতে হবে।
- এবার সূরা ফাতেহা পাঠ করতে হবে।
- সূরা মিলানো বাদ দিয়ে এখানে সম্পূর্ণ কোরআন সহকারে তারাবি আদায় করতে হবে।
- এরপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুকু ও সেজদা আদায় করতে হবে।
- এভাবেই দ্বিতীয় রাকাআত নামাজ আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হবে।
- এই ভাবে তারাবির ২ রাকাত নামাজ শেষ করতে হবে। একই ভাবে মোট ২০ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে।
ফরজ নামাজ ও তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করা উত্তম। রাসুল (সা:) নিজে ফরজ ও তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করেছেন এবং আমাদেরও জামাতে আদায় করতে বলেছেন।